1. m.a.roufekhc1@gmail.com : alokitokha :
খাগড়াছড়ি পৌর শহরের ফুটপাত দখল; পৌর প্রশাসন যেন নিরব দর্শক - আলোকিত খাগড়াছড়ি

খাগড়াছড়ি পৌর শহরের ফুটপাত দখল; পৌর প্রশাসন যেন নিরব দর্শক

  • প্রকাশিতঃ সোমবার, ১৮ মার্চ, ২০২৪
মো. আবদুর রউফ:
খাগড়াছড়ি পৌর শহর বাজার এলাকার ফুটপাত দখল করে বছরের পর বছর ধরে জমজমাট ব্যবসা জমিয়েছেন হকাররা। যখন তখন ঠুনকো অজুহাতে পৌর নাগরিকদের সাথে করছেন বেপরোয়া অশৃঙ্খল আচরণ।
সোমবার (১৮ মার্চ) দুপুর সোয়া ১টার দিকে খাগড়াছড়ি কেন্দ্রীয় মসজিদে নামাজ পড়তে আসেন আজিম উল হক। তখন মোটরসাইকেল রাখাকে কেন্দ্র করে ফুটপাত দখল করে দোকান দেওয়া জয়নাল আবেদিন নামে এক হকার কর্তৃক মারধরের শিকার হন তিনি। আজিম উল হক একাধারে খাগড়াছড়ি পৌরসভার টিএলসিসি মেম্বার, কেন্দ্রীয় শাহি জামে মসজিদ কমিটির সদস্য এবং খাগড়াছড়ি প্রেসক্লাবেরও সদস্য তিনি। পরে এ ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পরে। নিরব দর্শক হয়ে দেখে যাওয়া ছাড়া যেন আর কিছু করার নেই পৌরসভার। বছরের পর বছর এভাবে ফুটপাত দখল হলেও ভ্রুক্ষেপই করছেনা পৌর কর্তৃপক্ষ।
এদিকে পথচারী হাঁটার ফুটপাতে বসেছে একের পর এক অবৈধ দোকান। বিভিন্ন পণ্যসামগ্রীতে ভরে গেছে রাস্তার দুপাশ। কোথাও কোথাও ফুটপাত ছাড়িয়ে দোকান চলে গেছে সড়কে। বাধ্য হয়ে খাগড়াছড়িতে আগত পর্যটকসহ পথচারীদের ফুটপাত ছেড়ে হাঁটতে হয় সড়ক দিয়ে। এতে সড়ক দূর্ঘটনাসহ ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে সকলকে। পৌর কর্তৃপক্ষের কোনো তদারকি না থাকায় ব্যবসায়ীরা এমন সুযোগ নিচ্ছেন বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
সরেজমিনে দেখা গেছে, খাগড়াছড়ি মুক্তমঞ্চ থেকে কেন্দ্রীয় শাহী জামে মসজিদ হয়ে মসজিদের পূর্ব এবং দক্ষিণ পাশের সড়ক (পলাশ স্টোর সংলগ্ন), নিচের বাজার, জগন্নাথ মন্দিরের পাশের পুরো সড়ক, মাছ বাজার, এমনকি পৌর এলাকার প্রধান সড়কের কিছু এলাকার দুপাশ এখন ব্যবসায়ীদের দখলে। এসব জায়গায় বিভিন্ন পণ্যসামগ্রী রেখে চলছে বেচাকেনা। কাপড়ের দোকান থেকে শুরু করে সবই রয়েছে ফুটপাতে। যেকোনো সময়ে বাজারের মধ্যে ট্রাক রেখে উঠানামা করা হচ্ছে মালামাল। ফুটপাতে হাঁটতে পারছেন না পথচারীরা। ফলে সাইকেল, মোটরসাইকেল ও রিকশা-ভ্যান নিয়ে চলাচল করা কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে এসব সড়কে।
এ পরিস্থিতিতে মিশ্র প্রতিক্রিয়া জানান পথচারী ও ব্যবসায়ীরা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন ব্যবসায়ী বলেন, ‘আমরা প্রতিদিন ২০ টাকা করে ভাড়া দেই বাজার ফান্ডকে। বাজার ফান্ড থেকে বাজার ইজারা নেওয়া ব্যাক্তিদের প্রতিনিধিরা প্রতিদিন এসে এ টাকা নিয়ে যান। দীর্ঘদিন ধরে এভাবেই ব্যবসা করছি। পৌর কর্তৃপক্ষ ও প্রশাসন এ বিষয়ে আমাদের কখনো কিছু বলেনি। পৌরসভা আমাদের উঠিয়ে দিলে আমরা চলে যাব।’
বাজার ইজারাদারদের পক্ষে মো. জামাল উদ্দিন বলেন, ‘আমরা কয়েকজন মিলে বাজার ফান্ড থেকে খাগড়াছড়ি বাজার ইজারা নিয়েছি। বাজার ফান্ড আমাদের নির্দিষ্ট কোন বাজার বুঝিয়ে দেয়নি। ফলে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা বাধ্য হয়ে ফুটপাতে বসে পন্য কেনাবেচা করছে। পৌর কর্তৃপক্ষ ইচ্ছে করলে ফুটপাত দখলমুক্ত করতে পারে। আমাদের পক্ষ থেকে কোন বাধা নেই। আমরা চাই, ফুটপাত দখলমুক্ত করে জনসাধারণের চলাচলের উপযোগী করা হোক।’
খাগড়াছড়ি বাজার এলাকার বাসিন্দা কাজল দাশ বলেন, ‘আমার বাড়ি বাজারের পাশেই। হেটেই আমাকে বাজারে আসতে হয়। ফুটপাত নেই, ফুটপাতে দোকান বসানো হয়েছে। বাধ্য হয়ে সড়ক দিয়ে হাটতে গিয়ে দুইবার দূর্ঘটনার শিকার হয়েছি। বর্তমানে বাজারে আসা অনেক কষ্টকর ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে।’
এ বিষয়ে খাগড়াছড়ি বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি হাজী মো. লিয়াকত আলী চৌধুরী বলেন, ‘ফুটপাত দখলমুক্ত করা দরকার। এতে সবাই ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। জনগণের সুবিধার্থে এগুলো উচ্ছেদ করে চলাচলের জন্য উপযোগী করা দরকার। প্রশাসন, পৌর কর্তৃপক্ষ ফুটপাত দখলমুক্ত করে শহরের সৌন্দর্য ফুটিয়ে আনতে পারে।’
খাগড়াছড়ি পৌর মেয়র নির্মলেন্দু চৌধুরী বলেন, ‘ফুটপাত দখলমুক্ত করতে একটি কমিটি গঠন করে দেওয়া হয়েছিল। এ বিষয়ে আমাদের কাজ চলমান রয়েছে।’

সংবাদটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরো সংবাদ