1. m.a.roufekhc1@gmail.com : alokitokha :
করোনা মোকাবিলায় খাগড়াছড়ি স্বাস্থ্য বিভাগ কর্তৃক গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপসমূহ - আলোকিত খাগড়াছড়ি

করোনা মোকাবিলায় খাগড়াছড়ি স্বাস্থ্য বিভাগ কর্তৃক গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপসমূহ

  • প্রকাশিতঃ শুক্রবার, ১৭ এপ্রিল, ২০২০
আলোকিত খাগড়াছড়ি ডেস্কঃ 
বৈশ্বিক মহামারী করোনা ভাইরাস (কোভিট ১৯) মোকাবিলায় খাগড়াছড়ি স্বাস্থ্য বিভাগ বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। পাঠকদের জানার সুবিধার্থে পদক্ষেপ সমূহ নিচে তুলে ধরা হল।
১) রোগীর জন্য বেডঃ জেলা পর্যায়ে-
ক) সম্পূর্ণ আলাদা বিল্ডিংয়ে  ৮ টি আইসোলেসন বেড রয়েছে।
খ) হাসপাতালের পুরনো বিল্ডিংয়ের ৪২ টি বেড করোনা রোগীর জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
গ) বর্তমানে কেবিনে কোন রোগী ভর্তি হতে দেয়া হচ্ছে না, এই কেবিনগুলো করোনা চিকিৎসাপ্রদানকারী চিকিৎসক, নার্স ও সাপোর্টিং স্টাফদের জন্য বরাদ্ধ রাখা হয়েছে।
ঘ) এছাড়া প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারিন্টাইনের জন্য নিচতলার বিল্ডিংগুলো রিজার্ভ রাখা আছে।
ঙ) খাগড়াছড়ি পর্যটন মোটেলে ২২ টি কক্ষ,
চ) হোটেল ইকোছড়ি ইন এ ২৮ টি কক্ষ,
ছ) পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড রেস্ট হাউসের ১০ টি কক্ষ রাখা হয়েছে।
জ) এ ছাড়াও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মহোদয় চিকিৎসকদের প্রয়োজনে জেলা পরিষদ রেষ্ট হাউস ব্যবহারের সদয় অনুমতি প্রদান করেছেন।
উপজেলা পর্যায়ে,-
উপজেলা পর্যায়ে প্রতিটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৮ থেকে ১০টি বেড করোনা রোগীর জন্য বরাদ্ধ রাখা আছে এবং সেখানে করোনা উপসর্গ নিয়ে রোগী ভর্তি হচ্ছে।
২) জনবল,- সরকার নির্দেশিত চাহিদা মোতাবেক আমাদের করোনা রোগী চিকিৎসার জন্য মেডিকেল টিম রয়েছে। যেখানে অভিজ্ঞ ডাক্তার, নার্স  ও সাপোর্টিং স্টাফ রয়েছে।
৩) চিকিৎসা সুবিধা,- করোনা চিকিৎসার জন্য অক্সিজেন, এন্টিবায়োটিক ও অন্যান্য ঔষুধপত্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
৪) এম্বুলেন্স,- করোনা রোগী ট্রান্সফারের জন্য প্রত্যেক উপজেলায় এবং জেলা সদরে ডেডিকেটেড এম্বুলেন্সের ব্যবস্থা রয়েছে।
৫) করোনা সনাক্তকরন ব্যবস্থা,- আমরা সন্দেহজনক রোগীর কাছে থেকে  নমুনা সংগ্রহ করে বিনামূল্যে চট্টগ্রামে নিয়মিত পাঠাচ্ছি। আপনারা হাসপাতালে এসে নমূনা/স্যাম্পল দিতে অপারগ হলে আরএমও ডাঃ পূর্ণজীবন চাকমা কে ফোন দিলে উনি বাসায় লোক পাঠিয়ে স্যম্পল সংগ্রহের ব্যবস্থা করবেন।  ব্যবস্থা গ্রহন করবেন। প্রয়োজনে আরএমও ডা. পূর্ণজীবন চাকমা কে ফোন দিন, ফোন নাম্বার – ০১৯২৬০০৫০৪৩।
জ্ঞাতব্য- ম্যালেরিয়া ও ডেংগুর মত সাধারণ কীট দিয়ে করোনা ভাইরাস সনাক্ত করা যায় না। এজন্য দরকার বিশেষ মেশিন যা ব্যয়বহুল ও কারিগরি দক্ষতাসম্পন্ন লোকবল যা এ মুহুর্তে আমাদের এখানে নেই এবং অদূর ভবিষ্যতে এখানে হবার সম্ভাবনা কম।
৬) সীমাবদ্ধতা,- করোনা রোগী খারাপের পর্যায়ে গেলে প্রয়োজন কৃত্রিম শ্বাস-প্রশ্বাসের জন্য আইসিইউ সমৃদ্ধ ভেণ্টিলেশনের ব্যবস্থা যেটি আমাদের নেই।
৭) ব্যক্তিগত সুরক্ষা,- করোনা রোগী সরাসরি চিকিৎসা করতে গেলে প্রয়োজন পিপিই যা কয়েকপ্রকার জিনিসের সমন্বয়। বর্তমানে আমাদের পর্যাপ্ত গাউন, চশমা ও গ্লাভস রয়েছে।
উল্লেখ্য, এই গাউন সরকারীভাবে কিছু ব্যবস্থা হয়েছে এবং খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বাবু কংজরী চৌধুরী মহোদয় জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে ৫০০ টি গাউন কিনে দিয়েছেন।
উল্লেখ্য, বিগত ডেংগু সিজনে উনি আড়াই লক্ষ টাকার ডেংগু কিট কিনে দিয়েছেন যা খাগড়াছড়িতে ডেংগু মৃত্যু শূন্য কোটায় রাখতে সাহায্য করেছে। এখানে এখনো সরকারি সরবরাহ এন-৯৫ বা সমমানের মাস্ক নেই যা করোনা চিকিৎসা প্রদানকারীদের সুরক্ষার জন্য অতীব জরুরী।
আরো উল্লেখ্য যে,- হাসপাতলের প্রায় সব চিকিৎসক নিজের টাকায় কিছু এন-৯৫ সমমানের  মাস্ক কিনেছেন  কিন্তু এগুলো পরিমাণে পর্যাপ্ত নয়।
৮) করোনা সচেতনতা,- করোনা বিষয়ে খাগড়াছড়ি আধুনিক জেলা সদর হাসপাতালের আরএমও ঢাকা থেকে উচ্চতর প্রশিক্ষণ নিয়ে এসেছেন এবং সকল স্টাফদেরকে উনি নিজে মাল্টিমিডিয়ার মাধ্যমে প্রশিক্ষণ দিয়েছেন। এ জেলার সকল ডাক্তারদের মোবাইল নাম্বার লিফলেট আকারে এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে যাতে ঘরে বসেই মানুষ প্রয়োজনীয় চিকিৎসা পেতে পারেন।
সর্বশেষ অনুরোধ- এই মহামারী করোনা এককভাবে কারো পক্ষে মোকাবিলা করা সম্ভব নয়। আমাদের সবাইকে সচেতন হয়ে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এই দূর্যোগ জয় করতে হবে। আপনারা নিজেরা সচেতন হোন, ব্যক্তিগত পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা মেনে চলুন, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখুন, করোনা মোকাবিলায় অবদান রাখুন।

সংবাদটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরো সংবাদ