নিজস্ব প্রতিনিধিঃ
খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলায় মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে করোনা সংকটকালীন সময়ে জরুরী সংবাদ সংগ্রহের কাজে নিয়োজিত গণমাধ্যমকর্মীদের হয়রানির অভিযোগ উঠেছে।
পরিবহনের কাগজপত্র, ড্রাইভিং লাইসেন্স, হেলম্যাটসহ যাবতীয় সুরক্ষা সরঞ্জাম থাকা স্বত্ত্বেও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেটের মোবাইল কোর্টে এসব হয়রানি করা হচ্ছে। সম্প্রতি সময়ে একাধিক গণমাধ্যমকর্মীর সাথে এ অসৌজন্যমূলক আচরণ ও হয়রানির অভিযোগ রয়েছে।
সংবাদভিত্তিক বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল টোয়েন্টিফোর এর খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি নুরুচ্ছাফা মানিক অভিযোগ করে বলেন, ‘৬জুন শনিবার বিকেল ৫টার সময় বৃষ্টি পরবর্তী জলাবদ্ধতা ও নদী-ছড়ায় পানি বৃদ্ধির সংবাদ সংগ্রহের কাজে বের হয়ে জেলা সদরের আরামবাগ এলাকায় জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মোঃ মেহেদী হাসান শাকিলের নেতৃত্বাধীন মোবাইল কোর্টে পুলিশের সংকেত পেয়ে থামি। এসময় আমার ড্রাইভিং লাইসেন্সসহ মোটরসাইকেলের রেজিষ্ট্রশনের টাকা জমাদানের কাগজপত্র দেখাই। আমার হেলম্যাট থাকার পরও পেছনে বসা আরেক সহকর্মীর হেলম্যাট না থাকার অযুহাতে এসময় সড়ক পরিবহণ ২০১৮ এর ৯২ ধারায় অর্থদন্ড দেয় ভ্রাম্যমান আদালত। কিন্তু পরিতাপের বিষয় এসময় অন্যান্য মোটরসাইকেল ব্যবহারকারীদের শুধুমাত্র মৌখিকভাবে সতর্ক করে ছেড়ে দেয়া হয়। এসময় পরিচয় দিয়ে সংবাদ সংগ্রহের কাজে যাচ্ছি এবং আমার সহকর্মীর নিজস্ব মোটরসাইকেল না থাকায় উনার হেলম্যাট নাই বলার পর অসৌজন্যমূলক আচরণ করে “যা দন্ড দেয়া হয়েছে তা পরিশোধ করতে” নির্দেশ দেন নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রট।

খাগড়াছড়ি টিভি জার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ও বাংলাভিশন এর খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি এইচ এম প্রফুল্ল এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেন, খাগড়াছড়ির বিভিন্ন হাট বাজারে সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষিত হলেও এদিকে জেলা প্রশাসনের ম্যাজিস্ট্রেটদের কোন ভ্রুক্ষেপ নেই। কিন্তু প্রতিদিন বিভিন্ন সড়কে জরুরী কাজে নিয়োজিত মোটরসাইকেল চালকদের থামিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে। যা থেকে বাদ পড়ছেন না সাংবাদিক, অফিস আদালতে যাতায়াত করা ব্যক্তিরাও। সংশ্লিষ্টদের এ বিষয়ে নজরদারি করা দরকার।
এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন খাগড়াছড়ি প্রেস ক্লাব সভাপতি জীতেন বড়ুয়া, সাংবাদিক ইউনিয়ন সভাপতি নুরুল আজম ও অনলাইন প্রেসক্লাব সভাপতি মোবারক হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক মোঃ আবদুর রউফ।
জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট প্রতাপ চন্দ্র বিশ্বাসের নিকট এই বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সাংবাদিকগণ আইনের উর্ধ্বে নয়। সাংবাদিকদের ছেড়ে দিলে সাধারণ মানুষের আইনের উপর আস্থা থাকবেনা। মোটরসাইকেলে দুইজন থাকলে দুজনের হেলমেট থাকতে হবে। যারা আইন মানবেন না-তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া দোষের কিছু নয়। তিনি সাংবাদিকদের আইন মেনে চলার পরামর্শ দেন।