1. m.a.roufekhc1@gmail.com : alokitokha :
খাগড়াছড়ির কারারক্ষীর বাড়ি থেকে চুরি যাওয়া মোটরসাইকেল উদ্ধার- কারারক্ষী বহিষ্কার - আলোকিত খাগড়াছড়ি

খাগড়াছড়ির কারারক্ষীর বাড়ি থেকে চুরি যাওয়া মোটরসাইকেল উদ্ধার- কারারক্ষী বহিষ্কার

  • প্রকাশিতঃ শুক্রবার, ১৪ জানুয়ারী, ২০২২
  • ৪০ বার পড়া হয়েছে
নিজস্ব প্রতিনিধি:
মোটরসাইকেল চুরি এবং তা ক্রয়ের অভিযোগে খাগড়াছড়ি জেলা কারাগারের কারারক্ষী মো. আলী হায়দার (ব্যাচ-১৯৫৫)কে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। একই সাথে তার বিরুদ্ধে সরকারি আচরণ বিধিমালা লঙ্ঘনের দায়ে বিভাগীয় মামলা রুজু এবং খাগড়াছড়ি আদালতে ফৌজদারি মামলা করা হয়েছে। এ মামলায় গত বছরের ২৬ ডিসেম্বর গ্রেফতার হয়ে চলতি মাসের ৬ জানুয়ারি জেল হতে জামিনে বের হন তিনি। নোয়াখালীর বসুরহাট তার নিজ বাড়ি থেকে চুরি যাওয়া এ মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ‘গত বছরের ১৯ অক্টোবর গভীর রাতে খাগড়াছড়ির পৌর মেয়রের ছেলে সজিব চৌধুরীর ঘরের ড্রয়িং রুমের তালা ভেঙে অজ্ঞাত চোর কালো/গ্রে রংয়ের পালসার এনএস-১৬০ সিসি মোটরসাইকেলটি নিয়ে যায়। পরে সম্ভাব্য সব জায়গায় খোঁজাখোজি করে মোটরসাইকেলটি না পেয়ে অজ্ঞাত চোরদের আসামি করে খাগড়াছড়ি সদর থানায় একটি এজাহার দায়ের করেন সজিব চৌধুরী। এরপর পুলিশের চৌকস অফিসারের মাধ্যমে চোর শনাক্ত এবং মোটরসাইকেল উদ্ধার করে নতুন বছরের ৮ই জানুয়ারি মোটরসাইকেলের মালিক সজিব চৌধুরীর নিকট তা হস্তান্তর করেন সদর থানার অফিসার্স ইনচার্জ মোহাম্মদ রশিদ।
এ ঘটনায় সজিব চৌধুরী জানান, ‘গত বছরের ১৯ অক্টোবর রাতে আমার মোটরসাইকেলটি চুরি হয়। এরপর সদর থানায় একটি এজাহার দায়ের করেছিলাম। মোটরসাইকেলটি আমার খুব শখের ছিল। মোটরসাইকেল ফিরে পেয়ে আমি খুবই আনন্দিত। খাগড়াছড়ির পুলিশদের অক্লান্ত পরিশ্রমে আমি আমার মোটরসাইকেলটি ফিরে পেয়েছি। এজন্য আমি বাংলাদেশ পুলিশের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি’
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এস আই মো. আব্দুর রহমান জানান, ‘ক্লু লেস এ মামলায় মোটরসাইকেলটি উদ্ধার করা এতো সহজ ছিলোনা। আমরা প্রথমে সন্দেহযুক্তভাবে মামুন নামে এক চোরকে আটক করি তখন চোর কোনভাবেই স্বীকার যাচ্ছিল না যে সে মোটরসাইকেল চুরি করেছে। এরই মধ্যে আমরা সন্দেহযুক্ত চোরের এক মাসের কললিস্ট বের করে এক ব্যাক্তির সাথে সর্বোচ্চ যোগাযোগ শনাক্ত করি। আর সে ব্যক্তিটি হচ্ছে খাগড়াছড়ি জেলা কারাগারের কারারক্ষী আলী হায়দার। এরপর আদালতে আমরা সন্দেহযুক্ত চোরের ৭দিনের রিমান্ড আবেদন করলে আদালত জেল গেইটে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেয়। কিন্তু চোর সেখানে আগের অবস্থানে অটল ছিল। এরপর আদালতে পুনরায় ৭দিনের রিমান্ড আবেদন করলে আদালত ১দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদের শুরুতেই মামুন স্বীকার করে নেয় যে সে-ই মোটরসাইকেল চুরি করেছে এবং তা কারারক্ষী আলী হায়দারের নিকট ৪২ হাজার টাকায় বিক্রি করেছে। এ বিষয়ে গত বছরের ২৫ ডিসেম্বর আমরা আলী হায়দারকে আলাদাভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করলে আলী হায়দার প্রথমে তা অস্বীকার করেন। পরে ওদের মুখোমুখি করলে আলী হায়দার মোটরসাইকেল চুরির বিষয়ে সব স্বীকার করেন। এরপর ২৬ ডিসেম্বর তাকে গ্রেফতার করে আমরা আদালতে প্রেরণ করি।’
খাগড়াছড়ি সদর থানার অফিসার্স ইনচার্জ মোহাম্মদ রশিদ জানান, ‘গত ২০ তারিখে খাগড়াছড়ি পৌরসভার মেয়রের বাড়ির ভিতরে তালা ভেঙে অজ্ঞাত চোর মোটরসাইকেল চুরি করে নিয়ে যায় মর্মে থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়। এরপর আমরা সন্দেহজনকভাবে ১ চোরকে আটক করে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করি এবং পরবর্তীতে তার দেওয়া তথ্যমতে খাগড়াছড়ি জেলা কারাগারের কারারক্ষী আলী হায়দারের নোয়াখালীর কোম্পানিগঞ্জের বসুরহাট তার নিজ বাড়ি থেকে মোটরসাইকেলটি উদ্ধার করি। গত ৮ই জানুয়ারি মোটরসাইকেলের মালিক সজিব চৌধুরীর নিকট তা হস্তান্তর করি।’
খাগড়াছড়ি জেলা কারাগারের জেলার এ জি মাহমুদ জানান, ‘মোটরসাইকেল চুরির ঘটনায় জড়িত থাকার বিষয়টি প্রমাণিত হওয়ায় কারারক্ষী আলী হায়দার কে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে আমরা বিভাগীয় মামলা দায়ের করেছি। আমাদের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করছেন।’

সংবাদটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরো সংবাদ