শুক্রবার, ২৩ মে ২০২৫, ০৪:১১ পূর্বাহ্ন
অনলাইন ডেস্কঃ
বাঙালি জাতির মুক্তির স্বপ্নদ্রষ্টা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাতে গড়া সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ নানা চড়াই উৎরাই পেরিয়ে ৭৩ বছর পূর্ণ করছে আজ সোমবার।
দেশভাগের পর ১৯৪৮ সালের ৪ জানুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক মুসলিম হল থেকে সংগঠনটির যাত্রা শুরু হয়।
প্রতিষ্ঠাকালীন সময়ে এর নাম ছিল ‘পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগ’। পাকিস্তান আমলেই ‘মুসলিম’ শব্দটি ছেঁটে ফেলা হয়। স্বাধীনতার পর নাম হয় ‘বাংলাদেশ ছাত্রলীগ’।
গত সাত দশকে সংগঠনটি পেরিয়েছে ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন, ১৯৬৬ সালের ছয় দফা, ১৯৬৯ এর গণঅভ্যুত্থান, ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ আর নব্বইয়ের দশকের স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের ঝঞ্ঝামুখর সময়।
ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের বিভিন্ন ভবনে দেয়ালিকা ও গ্রাফিতি অঙ্কন করা হয়েছে।
ছাত্রস্বার্থ রক্ষার পাশাপাশি পাকিস্তান ও বাংলাদেশ আমলের অনেক সংকটকালীন সময়ে ছাত্রলীগ ছিল আন্দোলনের নেতৃত্বের ভূমিকায়। দাবি আদায়ের সংগ্রামে ঝরে গেছে বহু নেতাকর্মীর প্রাণ।
প্রতিষ্ঠাকালে নাইমউদ্দিন আহম্মেদকে আহ্বায়ক করে ১৪ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়। শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন এর প্রতিষ্ঠাতা সদস্য। পরের বছর ৫ সেপ্টেম্বর আরমানিটোলায় ছাত্রলীগের প্রথম সম্মেলনে দবিরুল ইসলাম সভাপতি ও মোহাম্মদ আলী সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন।
ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের বিভিন্ন ভবনে দেয়ালিকা ও গ্রাফিতি অঙ্কন করা হয়েছে।
“মুজিববর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর বছরে শিক্ষা-শান্তি প্রগতির মূল মন্ত্রে দীক্ষিত হয়ে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ বাস্তবায়নের পথে আরও এক ধাপ এগিয়ে যাবে। ছাত্রলীগের অভিভাবক বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার সকল নির্দেশনা যাতে আমরা বাস্তবায়ন করতে পারি, সেটি হবে আমাদের শপথ।”
ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের বিভিন্ন ভবনে দেয়ালিকা ও গ্রাফিতি অঙ্কন করা হয়েছে। তাতে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ বিনির্মাণে ছাত্রলীগের প্রত্যয় ও বিভিন্ন স্লোগান তুলে ধরা হয়েছে।
প্রতি বছর বর্ণাঢ্য আয়োজনে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন করা হলেও এবার করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে স্বাস্থ্যবিধি মেনে উদযাপনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। এবার থাকছে না প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা।
ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের বিভিন্ন ভবনে দেয়ালিকা ও গ্রাফিতি অঙ্কন করা হয়েছে।
সোমবার সকাল সাড়ে ৭টায় দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এবং দেশব্যাপী সংগঠনের দলীয় কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন করা হবে। সকাল ৮টায় ধানমণ্ডির ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু ভবনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানাবে ছাত্রলীগ।
সকাল ৯টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হল প্রাঙ্গণে কেক কাটা হবে। সকাল ১০টায় টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের প্রতিনিধি দল শ্রদ্ধা নিবেদন করে ফাতেহা পাঠ ও দোয়া মাহফিলে অংশ নেবে।
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর উদ্বোধন করা হবে বিকেল সাড়ে ৩টায়। কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ (কেআইবি) মিলনায়তনে বিকেল ৪টায় হবে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আলোচনা সভা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রধান অতিথি হিসেবে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হবেন অনুষ্ঠানে।
ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য বলেন, “বঙ্গবন্ধুর নিজ হাতে গড়া সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ সংগ্রাম, সাফল্য ও ঐতিহ্যের ৭৩ বছর পূর্ণ করেছে। ঐতিহাসিক শ্রেষ্ঠত্ব এখনও পর্যন্ত ছাত্রলীগের হাতেই আছে। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়ে সেই ধারাবাহিকতা বজায় রাখার চেষ্টা করে যাব।
ছাত্রলীগের জেলা, মহানগর এবং সব উপজেলার নেতাকর্মীদের যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে দলীয় কার্যালয়ে উপস্থিত থেকে আলোচনা সভায় যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের বিভিন্ন ভবনে দেয়ালিকা ও গ্রাফিতি অঙ্কন করা হয়েছে।
এছাড়া ৬ জানুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি সংলগ্ন স্বোপার্জিত স্বাধীনতা চত্বরে সকাল ১১টায় দুঃস্থদের মধ্যে শীতবস্ত্র বিতরণ ও স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রী বিতরণ করা হবে ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে। ৮ জানুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় হবে স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচি।
এসব কর্মসূচি ছাত্রলীগের সব ইউনিটেই সুবিধাজনক সময়ে পালন করা হবে বলে জানিয়েছে সংগঠনটি।