খাগড়াছড়িতে ক্লুলেস হত্যা মামলার আসামি গ্রেফতার ও রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ

প্রকাশিতঃ শুক্রবার, ১৭ মে, ২০২৪
৩৮ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিনিধি:

খাগড়াছড়ি সদর উপজেলার পেরাছড়া ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান দ্রোন চার্য্য ত্রিপুরার স্ত্রী ঈশ্বরী বালা ত্রিপুরার (৫৫) হত্যাকারীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সে সাথে চাঞ্চল্যকর ক্লুলেস এ হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ।

গ্রেফতারকৃত আসামীর নাম বিবেকানন্দ ত্রিপুরা (৩৬)। সে খাগড়াছড়ি সদর থানার চন্দ্র কুমার পাড়ার শর্পদং ত্রিপুরার সন্তান। এ উপলক্ষে বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টায় খাগড়াছড়ি পুলিশ সুপার কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ের আয়োজন করে পুলিশ।

প্রেস ব্রিফিংয়ে খাগড়াছড়ি জেলা পুলিশ সুপার মুক্তা ধর বলেন, ‘খাগড়াছড়িতে পাহাড়ি নির্জন এলাকায় ঈশ্বরী বালা ত্রিপুরারকে (৫৫) হত্যার পর হাত-পা বেধে বিবস্ত্র অবস্থায় লাশ গুম করে রাখে বিবেকানন্দ ত্রিপুরা (৩৬)। এরপর নিহতের গলার স্বর্ণের চেইন ও কানের দুল নিয়ে খাগড়াছড়ি বাজারের একটি দোকানে নিজের স্ত্রীর স্বর্ণ বলে বন্ধক রেখে ৫০ হাজার টাকা নিয়ে পালিয়ে যায়। সে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার উদ্দেশ্যে পানছড়ির সীমান্তবর্তী এলাকায় অবস্থান করে। পরে পুলিশের আভিযানিক একটি চৌকস দল সেখানে পলাতক অবস্থায় আসামি বিবেকানন্দ ত্রিপুরাকে (৩৬) গ্রেফতার করে। নিহতের স্বামী দ্রোন চার্য্য ত্রিপুরার মামলা দায়েরের ২৪ ঘন্টার মধ্যেই আসামিকে গ্রেফতার করা হয়।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এস আই রিয়াজ বলেন, ‘নিহতের স্বামী অজ্ঞাতদের আসামি করে ১৫ মে সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এরপর জেলার পুলিশ সুপার মুক্তা ধর উক্ত চাঞ্চল্যকর ক্লুলেস হত্যা মামলার রহস্য উম্মোচন ও ঘাতকদের আইনের আওতায় আনার লক্ষ্যে খাগড়াছড়ি সদর থানার অফিসারদের সমন্বয়ে একটি চৌকস টিম গঠন করে এবং হত্যা মামলাটি গভীর ও নিবিড় ভাবে তদন্ত করে রহস্য উম্মোচনের জন্য সার্বিক দিকনির্দেশনা প্রদান করেন।’ তিনি বলেন, ‘পুলিশ সুপারের সার্বিক দিকনির্দেশনা ও তত্ত্বাবধানে বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত বিশ্লেষণে উক্ত ক্লুলেস মামলার রহস্য উন্মোচিত হয়। তদন্তে প্রাপ্ত ঘাতক আসামী বিবেকানন্দ ত্রিপুরাকে (৩৬) ভারতে পলায়নের চেষ্টা করাকালে গ্রেফতার করা হয়।’

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত ১১মে ঝড় বৃষ্টির কারণে এলাকায় বিদ্যুৎ না থাকায় পাশের বাড়িতে সন্ধ্যা ৬.৩০ ঘটিকার দিকে সৌর বিদ্যুতের মাধ্যমে মোবাইল চার্জ দেওয়ার জন্য বাড়ি থেকে বের হন ভিকটিম ঈশ্বরী বালা ত্রিপুরা। পরবর্তীতে সে আর বাড়িতে না ফেরায় বাদী সম্ভাব্য সকল স্থানে এবং আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে খোঁজাখুঁজি করে ভিকটিমকে না পেয়ে গত ১৩ মে খাগড়াছড়ি সদর থানায় একটি নিখোঁজ ডায়েরি করেন। নিখোঁজ ডায়েরীর সূত্র ধরে তদন্তকালে পুলিশ গত ১৫ মে খাগড়াছড়ি সদর থানাধীন ৫নং ভাইবোনছড়া ইউপির ৯ নং ওয়ার্ডের কলাবন পাড়ার সেগুনবাগান থেকে ভিকটিম ঈশ্বরী বালা ত্রিপুরা এর বিবস্ত্র দেহ হাত, পা, গলা বাধা এবং আংশিক পঁচা অবস্থায় লাশ উদ্ধার করেন। উক্ত চাঞ্চল্যকর খুনের ঘটনার বিষয় ভিকটিমের স্বামী দ্রোন চার্য্য ত্রিপুরা ১৫মে বাদী হয়ে খাগড়াছড়ি সদর থানায় অজ্ঞাতনামা আসামীদের বিরুদ্ধে এজাহার দায়ের করেন। মামলা দায়েরের ২৪ ঘন্টার মধ্যেই আসামিকে গ্রেফতার করা হয়।

খাগড়াছড়ি জেলা পুলিশ সুপার মুক্তা ধর বলেন, ‘প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তারকৃত আসামি বিবেকানন্দ ত্রিপুরা (৩৬) অত্র মামলার ভিকটিম মৃত ঈশ্বরী বালা ত্রিপুরাকে (৫৫) হত্যার দায় স্বীকার করেছে। আসামি বিবেকানন্দ ত্রিপুরা (৩৬) কে বিজ্ঞ আদালতের মাধ্যমে পুলিশ রিমান্ডে এনে আরোও ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে এবং প্রাপ্ত তথ্যের আলোকে পরবর্তী আইনানুগ ব্যাবস্থা গ্রহণ করা হবে।’