1. m.a.roufekhc1@gmail.com : alokitokha :
এপ্রিলে আরো কমেছে রেমিটেন্স - আলোকিত খাগড়াছড়ি

এপ্রিলে আরো কমেছে রেমিটেন্স

  • প্রকাশিতঃ শুক্রবার, ১০ এপ্রিল, ২০২০

করোনা ভাইরাসের মহামারী বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশে প্রবাসীদের রেমিটেন্স পাঠানোর হারও কমতে শুরু করেছে। মার্চ মাসের চেয়েও নেতিবাচক ধারা দিয়ে শুরু হয়েছে এপ্রিল মাস। গত বছরের এপ্রিল মাসের প্রথম আট দিনে (১লা এপ্রিল থেকে ৮ই এপ্রিল) ৪৩ কোটি ডলারের রেমিটেন্স পাঠিয়েছিলেন প্রবাসীরা। চলতি এপ্রিল মাসের এই ৮ দিনে এসেছে তার অর্ধেকেরও কম। সপ্তাহের শেষ দিন বৃহস্পতিবার রেমিটেন্স এসেছে মাত্র ২০ কোটি ৮০ লাখ ডলার। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, দেশে অর্থনীতির প্রধান সূচকগুলোর মধ্যে আশার আলো জাগিয়ে রেখেছিল যে রেমিটেন্স, করোনা ভাইরাস মহামারী তাতেও হানা দিয়েছে। আর এমনটা হওয়াই স্বাভাবিক।

অনেক প্রবাসী দেশে ফিরে এসেছেন। যারা আছেন, তারাও কাজ করতে পারছেন না। সব বন্ধ। নিজেরাই চলতে পারছেন না। দেশে পরিবার-পরিজনের কাছে টাকা পাঠাবেন কী করে? এই পরিস্থিতির শেষ কবে, তা এখনও স্পষ্ট নয়। তারা জানান, দিন যতো যাচ্ছে, পরিস্থিতি ততই খারাপ হচ্ছে। আমাদের সবচেয়ে বেশি রেমিটেন্স আসে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো থেকে, সে দেশগুলোর অর্থনীতি মূলত তেলনির্ভর। কত দিনে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে, কেউ কিছু বলতে পারছেন না। এ অবস্থায় আগামী দিনগুলোতে রেমিটেন্স আরও কমবে, এটা নিশ্চিত করে বলা যায়। আবার মধ্যপ্রাচ্য থকে বাংলাদেশে যারা ফিরে এসেছেন, তারা আবার ফিরতে পারবেন কি না, তা নিয়ে সংশয়ে রয়েছেন।

বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তরা বলেন, করোনা ভাইরাসের কারণে রেমিটেন্সের প্রবাহ কমছে। সামনের দিনগুলোতে কি হবে তা অনুমান করা কঠিন।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত মার্চ মাসে ১২৮ কোটি ৬৮ লাখ ডলারের রেমিটেন্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা, যা গত বছরের মার্চ মাসের চেয়ে ১৩.৩৪ শতাংশ কম। আগের মাস ফেব্রুয়ারির চেয়ে কম ১২.৮৪ শতাংশ। মার্চ মাসের রেমিটেন্স গত এক বছর তিন মাসের চেয়ে সবচেয়ে কম। এর আগে গত বছরের ডিসেম্বর মাসে ১২০ কোটি ৬৯ লাখ ডলারের রেমিটেন্স এসেছিল।

তবে মার্চে অধঃগতি হলেও চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরের নয় মাসের (জুলাই-মার্চ) হিসাবে রেমিটেন্সে এখনও ১৬.১৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি ধরে রেখেছে বাংলাদেশ। গত ২০১৮-১৯ অর্থবছরের জুলাই-মার্চ সময়ে ১ হাজার ১৮৬ কোটি ৮৯ লাখ ডলার রেমিটেন্স এসেছিল। চলতি অর্থবছরের একই সময়ে এসেছে ১ হাজার ৩৭৮ কোটি ৫৪ লাখ ডলার।

করোনা ভাইরাস বৈশ্বিক মহামারী রূপ নেয়ার পর এই মার্চ মাসেই অনেকে দেশে ফিরে এসেছিলেন। এক কোটির বেশি বাংলাদেশি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রয়েছেন। এর মধ্যে জানুয়ারি থেকে মার্চের মাঝামাঝি পর্যন্ত ফিরে আসেন ৬ লাখ ৬৬ হাজার ৫৩০ জন। বাংলাদেশের জিডিপিতে প্রবাসীদের পাঠানো অর্থ বা রেমিটেন্সের অবদান ১২ শতাংশের মতো।

এদিকে রেমিটেন্সের এই পতনে বাজারে ডলার বিক্রি বাড়িয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বৃহস্পতিবার এক দিনেই বিভিন্ন ব্যাংকের কাছে ৪ কোটি (৪০ মিলিয়ন) ডলার বিক্রি করা হয়েছে। সবমিলিয়ে চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরের ৮ এপ্রিল পর্যন্ত (২০১৯ সালের ১ জুলাই থেকে ২০২০ সালের ৮ এপ্রিল) ৬১ কোটি ডলার বিক্রি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আর কেনা হয়েছে ৪০ কোটি ডলারের মত। যে ডলার কেনা হয়েছে তার পুরোটাই গত মার্চ মাসে কিনেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। কেন্দীয় ব্যাংক মনে করে, প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্স এবং রপ্তানি আয় কমে যাওয়ায় বাজারে ডলারের চাহিদা বেড়ে গেছে। অনেক ব্যাংকের হাতে থাকা ডলার দিয়ে এলসির দায় পরিশোধ করা যাচ্ছে না। চাহিদার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়েই ডলার বিক্রি করা হচ্ছে। বিশেষ করে জ্বালানি তেল এবং অন্যান্য জরুরি পণ্য আমদানির বিল পরিশোধের জন্য ডলারের চাহিদা বেড়ে গেছে। সরকার ২ শতাংশ হারে প্রণোদনা দেয়ায় প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্স বেড়েছিল। তাতে বাজারে ডলারের সরবরাহও বেড়েছিল।

সংবাদটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরো সংবাদ