1. m.a.roufekhc1@gmail.com : alokitokha :
রাঙ্গামাটিতে পরিবেশ বিপর্যয়, টানা বর্ষণে ৩৫৯ স্থানে পাহাড় ধস - আলোকিত খাগড়াছড়ি

রাঙ্গামাটিতে পরিবেশ বিপর্যয়, টানা বর্ষণে ৩৫৯ স্থানে পাহাড় ধস

  • প্রকাশিতঃ বুধবার, ৯ আগস্ট, ২০২৩

নিজস্ব প্রতিনিধি:

টানা ভারি বর্ষণে পাহাড়ি জেলা রাঙ্গামাটিতে সড়ক ও বসতবাড়ি সহ বিভিন্ন স্থানে দিন দিন ক্ষয়ক্ষতি বৃদ্ধি পাচ্ছে। বেশ কয়েকদিন ধরে বৃষ্টির ভারি বর্ষণে ধসে পড়ছে পাহাড় এবং পাহাড়ি ঢলে রাঙ্গামাটির বিভিন্ন উপজেলায় প্লাবিত হয়েছে নিম্নাঞ্চল। এতে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে ফসলী জমির। বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হওয়া ৬ দিনের টানা বর্ষণের ফলে রাঙ্গামাটি জেলার ছোট-বড় ভাঙ্গন সহ মোট ৩৫৯টি স্থানে পাহাড় ধসে পড়েছে।

পাহাড় ধসের কারণে জেলায় মোট ৫০৬ টি বসতঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে; এরমধ্যে আশ্রয়ণেরও ঘর রয়েছে ১৩টি এবং কোনো হতাহত হয়নি। তবে বরকল উপজেলায় পানিতে ডুবে নিখোঁজ রয়েছেন একজন। তাকে উদ্ধারের অভিযান চালাচ্ছে ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধারকারী দল। মঙ্গলবার বিকালে এ তথ্য জানিয়েছে রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত (সার্বিক) জেলা প্রশাসক মোঃ সাইফুল ইসলাম।

তিনি জানান, মঙ্গলবার পর্যন্ত রাঙ্গামাটি জেলায় পাহাড়ি ঢলের কারণে একটি পৌরসভাসহ ২২টি ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। জেলায় মোট ২৩৪টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এসব আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করছেন ৩ হাজার ৬৪ জন মানুষ।

এদিকে, মঙ্গলবার সকালে থেকে দুপুর পর্যন্ত সরেজমিনে দেখা গেছে, রাঙ্গামাটিতে ক্ষতিগ্রস্থ  বিভিন্নস্থান পরিদর্শনে দেখা যায় যে, শহরের ভেদভেদী-রাঙাপানি সড়কের তপোবন আশ্রম সংলগ্ন রাস্তার এক পাশ ধসে পড়ে গেছে। অন্যদিকে, কাপ্তাই-আসামবস্তী সড়কের বরাদম এলাকায়ও পাহাড় ধসের সৃষ্টি হয়েছে। অপরদিকে, রাঙ্গামাটি-চট্টগ্রাম সড়কের সাপছড়ি ইউনিয়নের দেপ্পোছড়ি এলাকায়ও মুল সড়কের পাশে পাহাড়ের মাটি ধসে পড়েছে।

রাঙ্গামাটি শহরের লোকনাথ মন্দির সংলগ্ন পশ্চিম মুসলিম পাড়ার বাসিন্দা হামিদা আক্তার জানান, অতি বৃষ্টির ফলে সোমবার ভোর ৫ টার দিকে তাঁর ঘরটি ধসে পড়ে। ঘর থেকে কিছু বের করেতে পারেননি।

শহরের শিমুলতলী এলাকার মোঃ আলী আকবর জানান, এতক্ষণ আশ্রয় কেন্দ্রে ছিলাম। ভারী বৃষ্টি হচ্ছে দেখে এখন পরিবার নিয়ে শশুরবাড়ী চলে যাচ্ছি। রাঙ্গামাটি শহরের ভেদভেদী-রাঙাপানি সড়কের পথচারী সুমন চাকমা জানান, ২০১৭ সালে পাহাড় ধসের পর এই সড়কটি মেরামত করছিল। এখন কয়েকদিনের ভারী বৃষ্টি হওয়াতে আবারও সড়কটির একপাশ ধসে গেছে। সড়কটি এখন ঝুকিপূর্ণ হয়ে গেছে।

এদিকে, কর্ণফুলী নদীতে তীব্র স্রোত ও ফেরির পল্টুনের লোহার দড়ি ছিঁড়ে যাওয়ার কারণে সোমবার দুপুর ২টা থেকে রাঙ্গামাটির কাপ্তাইয়ের রাঙ্গামাটি-বান্দরবান সড়কের চন্দ্রঘোনা ফেরি পারাপার বন্ধ করেছে। পল্টুনের ছিঁড়ে যাওয়া দড়ি মেরামত ও নদীর তীব্র স্রোত না কমা পর্যন্ত ফেরি পারাপার বন্ধ রেখেছে সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদপ্তর।

সড়ক ও জনপথ রাঙ্গামাটির নির্বাহী প্রকৌশলী সবুজ চাকমা জানান, তীব্র স্রোত আর পল্টুনের সমস্যার কারণে ফেরি পারাপার আপাতত বন্ধ রাখার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। কবে নাগাদ ফেরি চালু করা যেতে পারে সেটি আপাতত বলা যাচ্ছে না। তবে কর্ণফুলী নদীর দুই পাড়েই যানবাহন চলাচল করছে। কেবল ফেরি বন্ধ থাকায় এক পাড়ের যানবাহন অন্য পাড়ে যেতে পারছে না।

রাঙ্গামাটি জেলাপ্রশাসক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন খান জানান, বিগত কয়েকদিনের বৃষ্টিতে অনেক জায়গায় পাহাড় ধসের সৃষ্টি হয়েছে। সড়ক ও জনপথ বিভাগ অতি দ্রুত সময়ে রাস্তা চলচলের উপযোগী করেছেন।

তিনি আরো জানান, রাঙ্গামাটি জেলার মঙ্গলবার পর্যন্ত ১টি পৌরসভা সহ মোট ২২টি ইউনিয়নের নিম্নান্চ লে প্লাবিত হয়েছে এবয় জেলা জুড়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এই দূর্যোগ মোকাবেলায় জেলা প্রশাসনের সাথে পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও সেচ্চাসেবক টিম কাজ করে যাচ্ছেন।

সংবাদটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরো সংবাদ