দ্রুত লকডাউনের অবসান করোনা ভাইরাসের সংক্রামণের বিস্তার ঘটাবে। ফলে অনেক মানুষের মৃত্যু ঘটবে। আবার সামাজিক বিচ্ছিন্নতা নিশ্চিত করার জন্য লকডাউন বেশি দিন অব্যাহত রাখলে দরিদ্র্য মানুষ খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার কারণে মারা যেতে পারে। সমাজে হানাহনি সৃষ্টি হতে পারে। আজ এক বিবৃতিতে এসব মন্তব্য করেছে সুশাসনের জন্য নাগরিক-সুজন। এই অবস্থায় সংকট উত্তরণে নীতি-নির্ধারকদের কাছে বেশ কয়েকটি দাবি উত্থাপন করেছে সংস্থাটি।

দাবিগুলো হলো-
১. করোনা ভাইরাসের থাবায় বেকার হওয়া ব্যক্তি ও তাদের পরিবারের খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা দূরীকরণের লক্ষ্যে অবিলম্বে জোরালে কর্মসূচি প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করা। এর জন্য প্রয়োজন হবে সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সমন্বিত বিকেন্দ্রীভূত উদ্যোগ।

সুজন বলছে, আমরা আরো মনে করি, খাদ্য নিরাপত্তার জন্য উত্তম ব্যবস্থা হবে খাবারের পরিবর্তে বিকাশ কিংবা রকেট এর মাধ্যমে বেকার হওয়া ব্যক্তিদেরকে সরাসরি অর্থ প্রদান করা।

২. করানা ভাইরাসের কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতি একটি জাতীয় দুর্যোগ। এর ফলে সকল মত-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাই ঝুঁকিগ্রস্থ। আর দুর্যোগ অন্যান্য প্রকৃতিক দুর্যোগ থেকে ভিন্ন এবং এ ব্যাপরে সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য বহুমুখী বিশেষজ্ঞ জ্ঞান আবশ্যক। তাই রাজনীতিক ও বিশেষজ্ঞদের নিয়ে একটি সর্বদলীয় জাতীয় কমিটি অবলম্বে গঠন জরুরি।

৩. আমাদের নীতি-নির্ধারণকে তথ্যভিত্তিক করার লক্ষ্যে করোনা ভাইরাস সংক্রামণের ব্যাপ্তি জানতে সরাদেশে ব্যাপকভাবে পরীক্ষার আয়োজন করা।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, আমাদের অপ্রতূল, দুর্নীতিগ্রস্থ ও অদক্ষভাবে পরিচালিত সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি হঠাৎ বেকার হয়ে যাওয়া বিরাট জনগোষ্ঠীর খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারবে না। প্রসঙ্গত, ১০ টাকা দামে প্রদত্ত চাল, তা পাওয়া গেলেও, খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য যথেষ্ট নয়। আর খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা ভয়াবহ সমাজিক অস্থিরতা সৃষ্টি করতে পারে। ‘হাঙ্গরি ম্যান ইজ এংগ্রি ম্যান,’ যারা সহজেই সহিংস হয়ে ওঠতে পারে এবং এদেরকে সহজে মন করা যাবে না। এরই মধ্যে আমরা ক্ষুধার্তকে কিছু কিছু জায়গায় প্রতিবাদী হয়ে ওঠতে দেখেছি। যেমন, নারায়নগঞ্জের ফতুল্লায় ত্রাণের দাবিতে মানুষ কয়েক দিন আগে চেয়ারম্যানের বাড়ি ঘেরাও কার হয়।

সুজন বলছে, লকডাউন অব্যাহত থাকলে এবং খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার সমাধান দ্রুত করা না গেলে এ ধরনের প্রতিবাদ-প্রতিরোধ ব্যাপক আকার ধারন করতে পারে। তাই করোনা ভাইরাসের কারণে বেকার হওয়া বিরাট জনগোষ্ঠীর খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা অবিলম্বে দূর করা জরুরি।